শিক্ষার্থীদের টাকায় শিক্ষকদের এসি!

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’ নামে মোটা অংকের টাকা আদায় করছেন বিভাগীয় শিক্ষকরা।

বিভাগের সভাপতির কক্ষ ও সেমিনার লাইব্রেরিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) লাগানোর জন্যই এ টাকা নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালেও এখনো অনড় অবস্থানে রয়েছেন শিক্ষকরা। শনিবারের (১৩ আগস্ট) মধ্যে ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’ প্রত্যাহার না করলে আন্দোলনের যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, জাবি শাখা।

বিভাগের শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভাগের সভাপতির কক্ষ ও সেমিনার লাইব্রেরিতে এসি লাগানোর জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’ পাঁচ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছেন বিভাগীয় শিক্ষকরা।

পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে টাকার পরিমাণ এক হাজার টাকা কমিয়ে চার হাজার টাকা নির্ধারণ করেন শিক্ষকরা।

জাবির অন্যান্য বিভাগগুলো বইপত্র কিংবা ব্যবহারিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য বিভাগ উন্নয়ন ফি হিসেবে মোটা অংকের টাকা নিয়ে থাকে। যদিও কাগজে কলমে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের উন্নয়ন ফি নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। বিভাগ উন্নয়ন ফি আদায়ের বিষয়ে জাবির প্রশাসনের কোনো সুষ্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় বিভাগগুলো তাদের ইচ্ছে মতো উন্নয়ন ফি নির্ধারণ করেছে এবং তা আদায় করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো অর্থ আদায়ের নিয়ম নেই বিভাগগুলোর। কিন্তু ২০০৭ সালের সিন্ডিকেটের ২৬৩ তম সভায় তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের আলোকে এ অর্থ আদায় করছে বিভাগগুলো।

প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি শাখার সভাপতি দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল বলেন, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগীয় শিক্ষকদের কাছে এটা কাম্য নয়। এর মধ্যে দিয়ে শিক্ষকদের ব্যবসায়ীক মনোভাব ফুটে ওঠেছে। আমরা আশা করি শিক্ষকরা এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া বোঝা কমিয়ে আনবেন।

সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম বিভাগের সভাপতি উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, সিদ্ধান্তটি আমার একার সিদ্ধান্ত নয়। আমি এজেন্ডা তৈরি করেছিলাম। সে অনুযায়ী বিভাগের একাডেমিক সভায় পাঁচ হাজার টাকা ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’ নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী প্রশাসনিক ভবনেও চিঠি দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে আমরা আবার একাডেমিক সভা করে ‘বিভাগ উন্নয়ন ফি’ এক হাজার টাকা কমিয়ে চার হাজার টাকায় নিয়ে আসি।

তিনি বলেন, আমাদের ব্যবহারিকের জন্য কোনো সাপোর্ট নেই। ক্যামেরা নেই, ক্যামেরা পারসনও নেই, এডিটরও নেই। এগুলো বাহির থেকে ভাড়া করে আনতে হয়। এছাড়া জাবির লাইব্রেরিতে সাংবাদিকতা বিষয়ের ওপর তেমন কোনো বইও নেই।

কলা ও মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, জাবির এমন কোনো নিয়ম নেই। বিভাগ যেটা করবে সেটাই নিয়ম। বিভাগীয় শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্যই একটি নির্দ্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ নেয়া হয়। কোনো কোনো বিভাগ বেশি নেয়, আবার কোনটি বিভাগ কম নেয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0070860385894775